ধান চাষে গুড়িপচা রোগ (Rice Foot Rot) বাংলাদেশের কৃষকদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা। এই রোগ ধানের উৎপাদনশীলতা হ্রাস করে এবং ক্ষেত্রবিশেষে ১০-১৫ পর্যন্ত ফলন কমিয়ে দিতে পারে।
Open Calculator
ধান চাষে "গুড়িপচা রোগ" (Rice Foot Rot) বাংলাদেশের কৃষকদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা। এই রোগ ধানের উৎপাদনশীলতা হ্রাস করে এবং ক্ষেত্রবিশেষে ১০-১৫% পর্যন্ত ফলন কমিয়ে দিতে পারে।
গুড়িপচা রোগের কারণ ও লক্ষণ
রোগের কারণ:
- ধানের গুড়িপচা রোগ মূলত ছত্রাকজনিত, যা বীজ থেকে গাছ এবং গাছ থেকে পুনরায় বীজে ছড়াতে পারে।
- অতিরিক্ত পানি জমে থাকা, অপরিষ্কার চাষাবাদ, এবং সঠিক সেচ ব্যবস্থার অভাব এই রোগের বিস্তারে সহায়ক।
লক্ষণ:
- ধানের কুশি অবস্থায় পাতার খোল পঁচে বাদামি রঙ ধারণ করে।
- কাণ্ড নরম হয়ে যায় এবং গাছে ধরে টান দিলে সহজে উঠে আসে।
- পঁচা শামুকের মতো গন্ধ পাওয়া যায়।
প্রতিরোধ ও দমন ব্যবস্থাপনা
সংস্কারমূলক ব্যবস্থা:
- জমির পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করুন।
- পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন চাষাবাদ এবং জমি চাষ করে শুকিয়ে নিয়ে নাড়া জমিতেই পুড়িয়ে ফেলুন।
- সুষম পরিমাণে ইউরিয়া, টিএসপি এবং পটাশ সার ব্যবহার করুন।
- ধানের জাত অনুসারে সঠিক দূরত্বে চারা রোপণ করুন (২৫x২০ সেন্টিমিটার)।
রাসায়নিক ব্যবস্থা:
পরিসংখ্যান ও চিত্র
ধানের গুড়িপচা রোগের কারণে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ধানের ফলন হ্রাসের হার নিম্নরূপ:
অঞ্চল
|
ফলন হ্রাস (%)
|
রাজশাহী
|
১২%
|
খুলনা
|
১০%
|
চট্টগ্রাম
|
১৪%
|
সিলেট
|
১১%
|
উপরের তথ্যগুলো কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ২০২৩ সালের প্রতিবেদন থেকে সংগৃহীত।
✅ কৃষকদের জন্য সুপারিশ
- রোগমুক্ত বীজ ব্যবহার করুন এবং আক্রান্ত ক্ষেত থেকে বীজ সংগ্রহ করবেন না।
- জমির পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা রাখুন এবং সঠিক সেচ ব্যবস্থাপনা অনুসরণ করুন।
- পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন চাষাবাদ করুন এবং জমি চাষ করে শুকিয়ে নিয়ে নাড়া জমিতেই পুড়িয়ে ফেলুন।
- সুষম পরিমাণে সার ব্যবহার করুন এবং ধানের জাত অনুসারে সঠিক দূরত্বে চারা রোপণ করুন।
- প্রয়োজনে অনুমোদিত ছত্রাকনাশক ব্যবহার করুন।
এই নির্দেশনাগুলো অনুসরণ করে কৃষকরা ধানের গুড়িপচা রোগের প্রাদুর্ভাব কমিয়ে ফলন বৃদ্ধি করতে পারবেন।