SofolChashi SofolChashi

  • বগুরা, বাংলাদেশ

  • +880 1956 734 683

  • Mail Support: superadmin@sofolchashi.com

ধান চাষে জমি প্রস্তুতি ও বীজ নির্বাচন

ধান চাষে জমি প্রস্তুতি ও বীজ নির্বাচন

ধান চাষে জমি প্রস্তুতি ও বীজ নির্বাচন কৃষকদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক জমি প্রস্তুতি ও মানসম্মত বীজ নির্বাচন করলে ফলন বৃদ্ধি পায় এবং খরচ কমে। নিচে ধান চাষের জন্য জমি প্রস্তুতি ও বীজ নির্বাচন সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:


জমি প্রস্তুতি

১. জমির নির্বাচন ও প্রস্তুতি

  • উর্বর জমি নির্বাচন: রোদ পড়ে এমন উর্বর ও সেচ সুবিধাযুক্ত জমি বীজতলার জন্য নির্বাচন করতে হবে।

  • জমি চাষ: প্রতি বর্গমিটার জায়গার জন্য ২-৩ কেজি জৈব সার দিয়ে ভালোভাবে জমি তৈরি করতে হবে।

  • বীজতলা তৈরির পদ্ধতি:

    • পানি দিয়ে জমি থকথকে কাদা করে এক মিটার চওড়া এবং জমির দৈর্ঘ্য অনুসারে লম্বা করে ভেজা বীজতলা তৈরি করতে হবে।

    • যেসব এলাকায় ঠাণ্ডার প্রকোপ বেশি সেখানে শুকনো বীজতলা তৈরি করতে পারেন।

    • প্রতি বর্গমিটার বীজতলার জন্য ৮০-১০০ গ্রাম বীজের প্রয়োজন হয়।

২. বীজ বপন ও পরিচর্যা

  • বীজ বপনের সময়: বীজ বপনের আগে ৬০-৭০ ঘণ্টা জাগ দিয়ে রাখতে হবে।

  • বীজ বপনের পদ্ধতি: অঙ্কুরিত বীজ বীজতলায় ছিটিয়ে বপন করতে হবে।

  • পানি ব্যবস্থাপনা: বীজতলায় সব সময় নালা ভর্তি পানি রাখা উচিত। বীজ গজানোর ৪-৫ দিন পর বেডের উপর ২-৩ সেমি পানি রাখলে আগাছা ও পাখির আক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করা যায়।


বীজ নির্বাচন

১. জাত নির্বাচন

বিভিন্ন পরিবেশের উপযোগী ধান জাত নির্বাচন করা উচিত:

  • খরা প্রবণ এলাকার জন্য: ব্রিধান৫৬, ব্রিধান৫৭, ব্রিধান৬৬, ব্রিধান৭১।

  • জলমগ্নতা সহনশীল এলাকার জন্য: ব্রিধান৫১, ব্রিধান৫২, ব্রিধান৭৯।

  • লবণাক্ত এলাকার জন্য: ব্রিধান৪৭, ব্রিধান৫৫, ব্রিধান৬১।

  • পাহাড়ি এলাকার জন্য: ব্রিধান৭৫, ব্রিধান৮০, ব্রিধান৮৭।

২. বীজের মান যাচাই

  • অঙ্কুরোদগম পরীক্ষা: বীজ বপনের আগে ৬০-৭০ ঘণ্টা জাগ দিয়ে রাখতে হবে।

  • শোধন পদ্ধতি: বীজ শোধনের জন্য ১ লিটার পানিতে ১ কেজি বীজ ১২-২৪ ঘণ্টা ভিজিয়ে রেখে পরে পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিতে হবে। 


সার ব্যবস্থাপনা

ফলন বৃদ্ধির জন্য সঠিক সার প্রয়োগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ:

  • জৈব সার: প্রতি শতকে ৪০- ৪২ কেজি গোবর বা খামারজাত সার প্রয়োগ করতে হবে।

  • রাসায়নিক সার:

    • প্রতি শতকে ৩০০-৪০০ গ্রাম ইউরিয়া, ৫৫০-৬০০ গ্রাম টিএসপি, ৪০০-৪৫০ গ্রাম এমওপি, ৪৫০-৫০০ গ্রাম জিপসাম প্রয়োগ করতে হবে। 

সেচ ব্যবস্থাপনা

উচ্চফলনশীল জাতের ধান চাষে সেচের গুরুত্ব অপরিসীম:

  • সেচের সময়সূচি:

    • প্রথম সেচ: বীজ বপনের ১৭-২১ দিনের মধ্যে (৪-৬ পাতা পর্যায়)

    • দ্বিতীয় সেচ: বীজ বপনের ৫০-৫৫ দিনের মধ্যে (৮-১২ পাতা পর্যায়)

    • তৃতীয় সেচ: বীজ বপনের ৭৫-৮০ দিনের মধ্যে (মোচা বের হওয়া পর্যায়)

  • সেচের পরিমাণ: প্রতি সেচে জমিতে পর্যাপ্ত পানি নিশ্চিত করতে হবে। 


উপসংহার

ধান চাষে সঠিক জমি প্রস্তুতি, মানসম্মত বীজ নির্বাচন, সঠিক সার ও সেচ ব্যবস্থাপনা কৃষকদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করলে ফলন বৃদ্ধি পাবে এবং কৃষকদের আয় বাড়বে। কৃষকদের জন্য কৃষি বিভাগের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত।


দাতা সংস্থা

Big Image

সহযোগী সংস্থা

Partner Logo
Partner Logo
Partner Logo