ধান চাষে সার ব্যবস্থাপনা ও সেচ আধুনিক পদ্ধতি ও পরিসংখ্যানভিত্তিক দিকনির্দেশনা
Open Calculator
ধান চাষে সার ব্যবস্থাপনা ও সেচ: আধুনিক পদ্ধতি ও পরিসংখ্যানভিত্তিক দিকনির্দেশনা
বাংলাদেশের কৃষিতে ধান চাষ একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সঠিক সার ব্যবস্থাপনা ও সেচ পদ্ধতি অনুসরণ করলে উৎপাদন বৃদ্ধি পায় এবং কৃষকের আর্থিক সাশ্রয় হয়। নিচে আধুনিক পদ্ধতি ও পরিসংখ্যানভিত্তিক তথ্য উপস্থাপন করা হলো:
সার ব্যবস্থাপনা
১. জৈব সার ব্যবহারের সুফল
দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার কৃষকরা 'জিরো বাজেট ন্যাচারাল ফার্মিং' পদ্ধতি অনুসরণ করে কম খরচে ভালো ফলন পেয়েছেন। এ পদ্ধতিতে পানি, গোবর, গোমূত্র, চিটাগুড়, ডালের বেসন ও মাটি দিয়ে তৈরি 'জীবাণু সার' ব্যবহার করা হয়। ফলস্বরূপ, এক বিঘা জমিতে সার ও কীটনাশকে খরচ হয়েছে মাত্র ৩২০ থেকে ৩৫০ টাকা, যা পূর্বের তুলনায় অনেক কম। (৩০ শতকে ধান চাষে সার খরচ ৩২০ টাকা, ফলনে খুশি কৃষকেরা | প্রথম আলো)
২. আধুনিক সার প্রয়োগ যন্ত্রের ব্যবহার
রাজবাড়ীতে কৃষকরা দানাদার ইউরিয়া সার প্রয়োগ যন্ত্র ব্যবহার করে সারের প্রায় ৪০% সাশ্রয় করেছেন। এ পদ্ধতিতে সারের কার্যকারিতা ৭০% বৃদ্ধি পায় এবং পরিবেশবান্ধব হয়। (ধান চাষে সার প্রয়োগযন্ত্র ব্যবহারে বাড়ছে ফলন)
৩. সারের সঠিক প্রয়োগ পদ্ধতি
ধানের জমিতে সারের সঠিক প্রয়োগের জন্য নিচের পদ্ধতি অনুসরণ করা উচিত:
বিঘা প্রতি ৩৩ শতকে সারের পরিমান
ইউরিয়া= ৩০ কেজি
টিএসপি/ডিএপি= ১৫ কেজি
জিপসাম= ১৫ কেজি
পটাশ= ২০-২২ কেজি
জিংক/দস্তা= ১.৫০ কেজি
সেচ ব্যবস্থাপনা
১. এডব্লিউডি (AWD) পদ্ধতি
এডব্লিউডি পদ্ধতিতে জমিতে সেচের পানি পর্যায়ক্রমে দেওয়া হয়। এতে সেচের পানি ৩০-৩৫% সাশ্রয় হয়, ডিজেল খরচ ২৯% কমে যায় এবং ফলন ১২% বৃদ্ধি পায়।
২. পর্যবেক্ষণ নল স্থাপন
জমিতে পর্যবেক্ষণ নল স্থাপন করে মাটির ভেতরের পানি স্তর পর্যবেক্ষণ করা হয়। যখন পানি স্তর ১৫ সেন্টিমিটার নিচে নেমে যায়, তখন সেচ দেওয়া হয়। এতে সেচের পানি অপচয় কমে। ৩. সেচের সময়সূচি
পরিসংখ্যানভিত্তিক চিত্র
পদ্ধতি
|
সেচের পানি সাশ্রয়
|
ফলন বৃদ্ধি
|
ডিজেল খরচ কমানো
|
প্রচলিত পদ্ধতি
|
০%
|
০%
|
০%
|
এডব্লিউডি পদ্ধতি
|
৩০-৩৫%
|
১২%
|
২৯%
|
আধুনিক সার প্রয়োগ যন্ত্র
|
৪০% সারের সাশ্রয়
|
৭০% কার্যকারিতা বৃদ্ধি
|
-
|
উপসংহার
সঠিক সার ব্যবস্থাপনা ও আধুনিক সেচ পদ্ধতি অনুসরণ করে কৃষকরা উৎপাদন বৃদ্ধি ও খরচ কমাতে পারেন। এতে শুধু কৃষকের লাভ নয়, দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণেও সহায়ক হবে।
উপরের তথ্যসমূহ কৃষকদের জন্য সহায়ক হতে পারে। যদি আরও বিস্তারিত তথ্য বা পরামর্শ প্রয়োজন হয়, তাহলে নিকটস্থ কৃষি অফিস বা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সাথে যোগাযোগ করুন।